মৌর্য পরবর্তী যুগ
মৌর্য সাম্রাজ্যের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে একদিকে যেমন বিভিন্ন বৈদেশিক জাতি ( ব্যাকট্রিয় গ্রিক, শক, পহ্লব, কুষাণ প্রভৃৃতি) ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের উপর অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল, অন্যদিকে এই সময় ভারতের বিভিন্ন আঞ্চলিক রাজবংশের উত্থান হয়েছিল।
শুঙ্গ বংশঃ-
1) পুষ্যমিত্র শুঙ্গ মৌর্য সম্রাট বৃহদ্রথ কে খ্রিস্টপূর্ব 187 অব্দে( মতান্তরে 185 BC)- তে হত্যা করে শুঙ্গ বংশের প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
2) রাজধানী ছিল বিদিশা ( মধ্যপ্রদেশ)
3) দেবভূতি ছিলেন এই রাজবংশের শেষ রাজা।
কান্ব বংশঃ-
4) কান্ব বংশের রাজা বাসুদেব মাত্র নয় বছর রাজত্ব করতে সক্ষম হয়েছিলেন (72BC - 63 BC).
ব্যাকট্রিয় গ্রিকঃ-
5) গ্রীকের ডিমেট্রিয়াস কে বলা হতো ভারতীয়দের রাজা।
6) সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য গ্রীক রাজা ছিলেন মিলিন্দ বা মিনান্দার।
7) যার রাজধানী ছিল শিয়ালকোট।
8) বৌদ্ধধর্মাচার্য নাগসেন মিনান্দার কে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত করেছিলেন।
9) মিলিন্দের মুদ্রায় ধর্মচক্র আঁকা হয়েছিল।
10) বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে মিলিন্দ ও নাগসেনের প্রশ্নোত্তর পর্ব লিপিবদ্ধ আছে পালি ভাষায় রচিত মিলিন্দ পঞ্চহো (মিলিন্দ - প্রশ্ন) গ্রন্থে।
11) মিলিন্দ পঞ্হো গ্রন্থটি রচনা করেছিলেন নাগসেন।
শক ঃ-
12) শকদের আদি বাসস্থান ছিল মধ্য এশিয়ার সিরদরিয়া অঞ্চলে।
13) ভারতে রাজত্বকারী শক রাজাদের দুটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা ছিল খহরাত ও কর্দমক।
14) ক্ষহরাত রাজবংশের শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন নহপান।
15) কর্দমক রাজবংশের শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন রুদ্রদামন।
16) রুদ্রদামন - এর জীবনী ও কৃতিত্ব সম্পর্কে জানতে পারি তাঁর জুনাগর লেখ থেকে।
17) শক রাজারা ক্ষত্রপ ও মহাক্ষত্রপ উপাধি ধারণ করতেন।
পহ্লব ঃ-
18) পহ্লবদের আদি বাসস্থান ছিল কাস্পিয়ান সাগরের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চল।
19) শ্রেষ্ঠ রাজা গণ্ডোফার্নিস।
20) তিনি খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন।
কুষান ঃ-
21) কুষানরা ছিল ইউ - চি জাতি।
22) কুষাণরা হোয়াংহো নদীর পশ্চিমে কাংসু এবং নিংসিয়া অঞ্চলে বসবাস করত।
23) প্রথম কুষাণ রাজা ছিলেন প্রথম কদফিসিস বা কুজল কারা কদফিসিস।
24) বিম কদফিসিস বা দ্বিতীয় কদফিসিস ই ভারতের প্রথম কুষাণ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন।
25) বিম কদফিসিস এর উপাধি ছিল মহারাজাধিরাজ দেবপুত্র কুষাণ।
26) এই বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট কনিষ্ক।
27) 78 অব্দে তিনি শকাব্দ শুরু করেন।
28) পুরুষপুর বর্তমান পেশোয়ার ছিল কনিষ্কের রাজধানী।
29) ধর্ম প্রচারক হিসেবে কনিষ্ককে দ্বিতীয় অশোক আখ্যা দেওয়া হয়।
30) কুষাণ যুগে ধর্মরত্ন ও কাশ্যপ মাতঙ্গ নামে দুজন ধর্মপ্রচারক চিনে গিয়েছিলেন।
31) নাগার্জুন,পার্শ্ব, অশ্বঘোষ,বসুমিত্র, শল্যবিদ সুশ্রুত, আয়ুর্বেদাচার্য চরক প্রমূখ পন্ডিত, দার্শনিক,কবি,শাস্ত্রজ্ঞ কনিষ্কের রাজসভা অলংকৃত করেছিলেন।
সাতবাহন ঃ-
32) সাতবাহন রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সিমুক।
33) পুরানে এই রাজবংশ অন্ধ্রবংশ নামে পরিচিত ছিল।
34) তৃতীয় রাজা প্রথম সাতকর্ণী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পায় তার স্ত্রী নায়নিকার নানাঘাট শিলালিপি থেকে।
35) প্রথম সাতকর্ণীর মৃত্যুর পর তার বিধবা স্ত্রী নায়ণিকা বেদশ্রী ও শাক্তশ্রী নামে দুই নাবালকের অভিভাবিকা হিসেবে কিছুদিন শাসনকার্য চালিয়েছিলেন।
36) গৌতমীপুত্র সাতকর্ণী সম্পর্কে জানতে পারি তার মাতা গৌতমি বলশ্রীর নাসিক প্রশস্তি থেকে।
37) এই বংশের অপর দুই উল্লেখযোগ্য রাজা ছিলেন বশিষ্ঠ পুত্র সাতকর্ণী ও যজ্ঞশ্রী সাতকর্ণী।
পান্ড্য বংশ ঃ-
38) এরা তামিল দেশ শাসন করতো।
39) প্রথমে রাজধানী ছিল কোরকাই, পরবর্তীকালে মাদুরাই।
40) সঙ্গম সাহিত্যে (100 খ্রিষ্টাব্দ - 200 খ্রিস্টাব্দ) পান্ড্য রাজ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়।
চোল বংশ ঃ-
41) এই রাজবংশ গড়ে উঠেছিল কৃষ্ণা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে।
42) রাজধানী - পুহার, উরাইউর।
43) প্রধান রাজা ছিলেন কারিকল চোল। যিনি চের ও পাণ্ড্যদের পরাভূত করেছিলেন।
চের বংশ ঃ-
44) চের রা বর্তমান ভারতের তামিলনাড়ু ও কেরল রাজ্যের মালাবার উপকূল এবং কোয়েম্বাটুর নামাক্কল,কারুর জেলাগুলিতে রাজত্ব করত।
45) রাজকীয় চিহ্ন ছিল ধনুক।
46) রাজধানী - কারুভূর, মারান্ডি।
No comments:
Post a Comment