প্রতিবাদী ধর্ম আন্দোলন

প্রতিবাদী ধর্ম                        আন্দোলন




খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ভারতের প্রায় 63 টি প্রতিবাদী ধর্ম উদ্ভব ঘটেছিল যার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ধর্ম হল:--


                     জৈন ধর্ম      


1)জৈন শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ "জিন" থেকে (যার অর্থ জয়ী)।

2) জৈন ধর্মে মোট 24 জন তীর্থঙ্কর (বা ধর্মগুরু)- এর নাম পাওয়া যায়।

3)প্রথম তীর্থঙ্কর রিষভদেব বা আদিনাথ।

4)  23 তম তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথ।

5)  24 তম বা শেষ তীর্থাঙ্কর মহাবীর।

6) জৈন ধর্মের একজন মহিলা তীর্থঙ্কর হলেন মালিনাথ(19 তম তীর্থঙ্কর)

 7)জৈনদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ দ্বাদশ অঙ্গ।

 8)প্রাচীন ধর্মশাস্ত্রগুলোতে  জৈন ধর্মকে শ্রমনদের ধর্ম বা নিগ্রন্থ (সংসার বন্ধনহীন ) দের ধর্ম বলা হয়েছে।

9) জৈনদের প্রথম লিখিত ধর্মশাস্ত্র  ভদ্রবাহু রচিত কল্পসূত্র (মহাবীরের  বিষয়ক )।

10)আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব 599 অব্দে বৈশালীর উপকণ্ঠে কুন্দলপুর (কুন্দগ্রাম) নামক স্থানে মহাবীর জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

11) বাল্যকালে তাঁর নাম ছিল বর্ধমান।

12)তাঁর পিতা ছিলেন  জ্ঞাতৃক/ ইক্ষাকু রাজ বংশের রাজা সিদ্ধার্থ।

13) মাতা ছিলেন বৈশালীর রাজা চেতকের ভগিনী।

15 তার স্ত্রীর নাম যশোদা।

16) মহাবীরের প্রথম সন্ন্যাস গুরু ছিলেন গোশাল।

17) দীর্ঘ 12 বছর কঠিন তপস্যা করে ঋজুপালিকা নদীর তীরে জৃৃম্ভিকা নামক গ্রামে এক শাল বৃক্ষের নীচে  কৈবল্য (পরম জ্ঞান) লাভ করে জিন বা  জিতেন্দ্রীয় নামে বিখ্যাত হন।

18) মগধ রাজ অজাতশত্রু,কোশামবীরাজ স্থানক প্রমুখ রাজন্যবর্গ মহাবীরের অনুগামী ছিলেন।

19)  পার্শ্বনাথের চর্তুযাম ব্রত হল -    
   i)অহিংসা
ii)সত্যবাদিতা 
    iii) অস্থেয় বা অচৈর্য (চুরি না করা)
iv)  অপরিগ্রহ

20)মহাবীর এই চর্তুযাম এর সঙ্গে ব্রহ্মচর্য যোগ করেছিলেন আর এই পাঁচটি কে একত্রে পঞ্চ মহাব্রত বলা হয়। 

21) তিনি যাগ যজ্ঞ,পশুবলি,বেদ, ঈশ্বর মানতেন না।

22)   72 বছর  বয়স খ্রিস্টপূর্ব   527 অব্দে পাটনার নিকট বর্তমান পাবাপুরিতে  মহাবীর দেহত্যাগ করেছিলেন।

23)  জৈন ধর্মাবলম্বীরা দিগম্বর ও শ্বেতাম্বর নামে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়েছিলেন।

 24) জৈন সন্ন্যাসী ভদ্রবাহুর নেতৃত্বে যারা দক্ষিণ ভারতে চলে গিয়েছিলেন, যারা মহাবীরের অনুশাসন গুলি কঠোরভাবে মেনে চলতেন এবং যারা বস্ত্র ধারণ করতেন না  তারা দিগম্বর নামে পরিচিত ছিল।

25) আর  যারা স্থূলভদ্রের নেতৃৃত্বে  উত্তর ভারতেই ছিলেন এবং যারা শ্বেতবস্ত্র পরিধান করতেন তারা শ্বেতাম্বর না পরিচিত ছিলেন।

 26) যেসব উপাদান থেকে জৈন ধর্ম সম্পর্কে জানা যায় জৈন ধর্মগ্রন্থ,দ্বাদশ অঙ্গ, ভদ্রবাহু রচিত কল্পসূত্র,জৈন গ্রন্থ ভগবতী সূত্র প্রভৃৃতি।

27)জৈন ধর্মের মূলগ্রন্থ হলো  অগমা।


                           বৌদ্ধ ধর্ম


1)বৌদ্ধ ধর্মের প্রবক্তা গৌতম বুদ্ধের জীবনী সম্পর্কে ও তার ধর্ম সম্পর্কে জানা যায় বিভিন্ন পালি গ্রন্থ থেকে যেমন    মহাবস্তু,,বুদ্ধচরিত,,ললিতবিস্তার,নিদানকথা,, অভিনিষ্ক্রমণ সূত্র, বিনয়পিটক মহাপরিনির্বাণ সূত্র প্রভৃৃতি।

2) বুদ্ধ শব্দের অর্থ হলো জ্ঞানী বা আলোক প্রাপ্ত।

 3)তার তাঁর পিতা ছিলেন শাক্য ট্রাইবের  নেতা শুদ্ধোধন।

4)  মাতা ছিলেন লিচ্ছবি দৈহিত্র  মায়াদেবী।

 5) জন্মস্থান কপিলাবস্তুর কাছে লুম্বিনী(রুম্বিনী দেঈ) নামক স্থানে।

6)বুদ্ধের জন্ম ও মৃত্যু একই তিথিতে( বৈশাখী পূর্ণিমা তিথি তে )   

7)খ্রিস্টপূর্ব 566 অব্দে গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

8)বাল্যকালে তার নাম ছিল সিদ্ধার্থ।

9)জন্মের সাতদিন পর তার মাতা মারা গেলে মাসি  গৌতমির কাছে মানুষ হয়ে ছিলেন বলে তাঁর নাম গৌতম।

10) 16 বছর বয়সে যশোধরা নামক এক শাক্য  কন্যার সাথে তাঁর বিবাহ হয়।

11)তার পুত্রের নাম ছিল রাহুল।

12) জরা, ব্যাধি,মৃত্যু ও সন্ন্যাস এই চারটি জিনিসের পেছনে কি কারন আছে তা খোজার জন্য তিনি 29 বছর বয়সে প্রিয় ঘোড়া কন্টকের পিঠে চড়ে সারথি ছন্দকের  সঙ্গে গৃৃহত্যাগ করেন বৌদ্ধ শাস্ত্রে এই ঘটনা মহাভিনিস্ক্রমন (the great going)নামে খ্যাত।

13)সারনাথের মৃৃগদাব  নামক উদ্যানে তিনি ধর্মচক্র প্রবর্তন (turning the wheel of law) করেছিলেন।

14)তিনি দেহত্যাগ (মহাপরিনির্বান লাভ) করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার  কুশিনগরে।

15)তাঁর মৃৃত্যুর সাথি  ছিলেন আনন্দ।

16)চতুর্থ আর্যসত্য(four noble trouth)  : - 
i) সংসার দুঃখময়
 iiদুঃখের কারণ আছে (তৃষ্ণা ও অবিদ্যা)
iii)  দুঃখের  নিবৃৃতি সম্ভব 
iv) মুক্তিলাভের নির্দিষ্ট পথ বা মার্গ আছে।

17) অষ্টাঙ্গিক মার্গ(eight fold path 
) -  সৎবাক্য,সৎকর্ম, সৎ জীবিকা,সৎ শ্রম,সৎ মনন, সৎ সংকল্প, সম্মক দৃৃষ্টি, সম্মক সমাধি।

14)বুদ্ধের মৃৃত্যুর পর বৌদ্ধ ধর্ম দুটি প্রধান মতবাদে বিভক্ত হয়ে যায়। হীনযান বা থেরাবাদ   এবং  মহাযান।

15)বৌদ্ধদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ  ত্রিপিটক (বিনয় পিটক, সূত্র পিটক, অভিধর্ম পিটক) লেখা হয়েছিল পালি ভাষায়।

16)এশিয়ার আলো বলা হয়ে বুদ্ধকে।

17)অনাথপিণ্ডক নামে একজন  ধনী ব্যক্তি বুদ্ধকে জেতবন বিহার দান করেছিলেন।

18)জাতকের সংখ্যা 550 টি।

19) ভারতের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় - নালন্দা (413 খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত)
 
       বৌদ্ধ সংগীতি  ঃ-  




            

বৌদ্ধ সংগীতির নাম রাজত্বকাল স্থান সভাপতি গুরুত্ব/ প্রধান বিষয়বস্তু
প্রথম বৌদ্ধ সংগীতি অজাত শত্রু রাজগৃহ মহাকাশ্যপ বুদ্ধের বাণীগুলি তিনটি পিটকে বিভক্ত হয়
দ্বিতীয় বৌদ্ধ সংগীতি কালাশোক বৈশালী সবাকামি বৌদ্ধরা থেরাবাদী ও মহাসংঘিকা নামে দুটি দলে বিভক্ত হয়
তৃতীয় বৌদ্ধ সংগীতি অশোক পাটলিপুত্র মোগালি পুত্র বৌদ্ধদের দের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়
চতুর্থ বৌদ্ধ সংগীতি কনিষ্ক কাশ্মীরের জলন্ধর বসুমিত্র হীনযান ও মহাযান সম্প্রদায়ে ভাগ ও মহাযানের স্বীকৃতি লাভ

                    আজীবিক ধর্ম

1)প্রতিষ্ঠাতা -  মংখলিপুত্র গোশাল।

2) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য,অশোক প্রমূখ রাজন্যবর্গ আজীবিক ধর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।

3) অশোক আজীবিকদের বরাবর গুহা দান করেছিলেন।




No comments:

Post a Comment